“হ্যালো”,অচেনা ল্যান্ড নম্বরের ফোন,এই অসময়ে! লেখা সংক্রান্ত কারণে কেউ ফোন করেছে ভেবে ফোনটা ধরে উৎসব।
“উৎসব”,মানিনী নিজের ফোন থেকে কোনো ভাবে লাইন না পেয়ে আজ পাবলিক বুথ থেকেই ফোনটা করে।কাল রাতে নিজের বাবার নম্বর থেকেও চেষ্টা করেছিল কিন্তু ওর ফোনের মতোই একই রকম ‘বিপ বিপ’ টোন হয়ে গেছিল।
“মানিনী!! তুমি? কোথাকার নম্বর এটা?”,উৎসবের রাগ আবার মাথা চাড়া দেয়।
“বুথ থেকে করছি।আমার ফোন থেকে তোমার নম্বরে ফোন যাচ্ছেনা।কাল বাবার ফোন থেকে করেও একই বিপবিপ…”,কথা শেষ করতে পারেনা মানিনী।
“কেন তোমায় বলেই তো নম্বর ব্লক করেছি আমি।তার মানে কোনো কথা বলতে চাইনা।তাহলে কেন আবার বুথ থেকে ফোন করেছ?যাতে অচেনা নম্বর দেখে আমি ধরি?কত চালাকি জানো তুমি!!”,উৎসবের গলায় শ্লেষ ঝরে পড়ে।
“তুমি সত্যি সত্যি ব্লক করেছ আমার নম্বর? এত সহজ সব শেষ করে দেওয়া? আমার কিছু বলার সুযোগ অবধি থাকবে না?” বিস্ময় লুকোতে পারেনা মানি।
“আজ মনে পড়ছে তোমার এসব কথা?এক সপ্তাহ আগের সেই তেজ কোথায় গেল? ফুটুনি বেরিয়ে গেল? চাকরি বুঝি জোটেনি?চাকরি পাওয়া এত সোজা হলে…”,এবার বাধা পায় উৎসব।
“সোজা? তোমার মনেহয় আমি না খেটেই ইন্টারভিউ ক্লিয়ার করে মেডিকেল টেস্ট অবধি পৌঁছে গেছি!!আরে দিনরাত এক করে পড়েছি একটা চাকরির জন্যে,শুধু আমাদের কথা ভেবে।আর তুমি…”,থামতে হয় মানি কে।
“আরে রাখো তোমার এসব বড় বড় বোলচাল।আমি বলেছি কোনোদিন তোমার চাকরিতে আমার সংসার চালাবো?বাড়ির মেয়ে বৌদের পয়সায় যারা খায় তাদের দলে আমরা পরিনা।মেয়ে চাকরি করবে আর বাপ বসে বসে ফুটুনি মারবে আর সেই পয়সায় খাবে,এসব তোমাদের ফ্যামিলিতে হয়।আমাদের না”,উৎসবের কথার টোন ভদ্রতার সীমা পেরিয়ে যায়।
চমকে ওঠে মানিনী।এটা কার সাথে কথা বলছে ও! এই ছেলেটাকেই ও ভালোবেসেছিল!কিছু উত্তর মুখে আসেনা ওর।তাও নিজেকে সামলে বলে,”বাহ এই তাহলে তোমার ধারণা আমি আর আমার ফ্যামিলিকে নিয়ে? আমি জব করতে চাই কারণ আমার বাবা আমার পয়সায় খেয়ে ফুটুনি মারবে বলে আমায় চাকরি করতে পাঠিয়েছে?দারুন।তা শুধু এই চাকরি করতে চাওয়ার ইচ্ছাটা কি তোমার অজানা ছিল? তুমি জানতে না আমি পড়াশোনা করছি,পরীক্ষা দিচ্ছি আজ প্রায় চার বছর? কি ভাবতে আমি টাইম কিল করছি?চাকরি করার ইচ্ছা অজুহাতমাত্র?”
“না।তোমার চাকরি করতে চাওয়ার ইচ্ছা শোনার প্রথমদিনই আমি তোমায় বলেছিলাম মেয়েদের স্কুলে চাকরি বা ব্যাঙ্কে চাকরির বাইরে অন্য কোনো কাজ আমার বা আমার বাড়ির লোকের পছন্দ না।তুমি ওই দুটো করতে পারো।কিন্তু তুমি সেদিনও তর্ক করেছিলে,তাই আমি চুপ করে গিয়েছিলাম।কিন্তু তুমি এতদূর এগিয়ে যাবে আমায় না জানিয়ে আমি ভাবিনি।তুমি দিল্লিতে গিয়ে চাকরি করবে,আর আমি এখানে পরে থাকবো।তাহলে সংসার করা কেন?” উৎসবের গলা চড়তে থাকে।
“আমি তোমায় সেদিনও বুঝিয়েছিলাম আমার সাবজেক্টে স্কুল টিচারি সম্ভব না।ব্যাঙ্কের চাকরি ইনকনোমিক্স অনার্সে সম্ভব কিন্তু আমি বারবার অত টাকা দিয়ে ফর্ম ফিল আপ করতে পারবো না।তাও ক’বার চেষ্টা করেছি।ওর জন্যে পড়া সম্পূর্ণ আলাদা।ওটার আলাদা ডেডিকেশন লাগে।ছাড়ো তোমায় বোঝানো আর দেয়ালকে বোঝানো একই ব্যাপার”,মানিনী আর ধৈর্য্য রাখতে পারেনা।একই জিনিস কতবার বোঝাবে ও,আর তাছাড়া ওর নিজের পছন্দ নয় ব্যাংকের চাকরি।
“বোঝাতে এসেছই বা কেন? আমি তো বলিনি,যেচে ফোনও করিনি।সম্পর্ক রাখতে চাইনি তোমার সাথে।তুমিই তো…”,উৎসব এবার চেপে ধরতে যায় মানি কে।অনেকদিন ধরেই ওর আর এই সম্পর্কের বোঝা টানতে এমনিও ভালো লাগছিলো না।ওর এখন নিজের কেরিয়ার গুছতে সময় দরকার।সময় দরকার লেখার,আর ওই সার্কলের মানুষদের সাথে সময় কাটানো।মানে দিনের সময়ের সাথে সাথে দরকার বছরের সময়েরও।ও এখন সংসার শুরু করতে পারবে না।কিন্তু এই মেয়ে নাছোড়বান্দা ওকে সংসারের জালে জড়াতে।
প্রথমে নিজের কেরিয়ারের অনিশ্চয়তা দেখিয়ে কাটাতে চেয়েছিল ও মানিনী কে।কিন্তু ও চাকরি করবে না শুনেও ওর হাত ছাড়েনি এই মেয়ে।এবার বুঝতে পারছে কী ছিল ওর মনে।কিন্তু উৎসব এসব ফাঁদে এখন কিছুতেই পড়বে না।তাই সবচেয়ে ভালো কেটে ফেলা।
“তুমি তাহলে কি চাও? দিল্লির চাকরিটা আমি জয়েন করবো না,তাই তো?তাই হবে।আমি কলকাতায় চাকরি খুঁজবো।ব্যাঙ্কের প্রিপারেশন নেওয়ার সময় আমার নেই।কিন্তু…”,সম্পর্কের স্বার্থে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় খেয়ালই থাকেনা মানির যে উৎসব ওকে ব্লক করে দিয়েছে সে আদৌ সম্পর্কটা নিয়মিত করতে উৎসাহী কিনা! ওকে থামিয়ে উৎসব সেই উত্তর দিয়ে দেয়।
“দাঁড়াও দাঁড়াও।এসব কথার এখন আর কোনো অর্থ নেই।অর্থ থাকতো,আমি কনসিডার করতাম যদি তুমি সেদিন ট্রেন থেকে নেমে আসতে।তুমি সেদিন আমার কথার গুরুত্ব অবধি দাওনি।ভেবেছিলে চাকরি পেলে আমি সব মেনে নেব।এখন যখন দেখছো আমি শুধু মুখে বলিনি,কাজেও করেছি তখন উল্টো গান গাইছো।কিন্তু না বস তুমি তো আর সুযোগ পাবেনা।এখনই যদি তোমার ঔদ্ধত্য এইরকম হয়,বিয়ের পর তো তুমি আমায় পাত্তাই দেবেনা।আমি এরকম মেয়ের সাথে বাকি জীবন কাটাতে পারবো না।দুঃখিত মানিনী।আর তুমি আমায় ফোন করবেনা,কোনো সম্পর্ক নেই আমার আর তোমার।এটা মাথায় রেখ।গুডবাই”,মানিনী কে আর কথা বলার সুযোগ দেয় না উৎসব,ফোন কেটে দেয় ও।
কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মানিনী বুথের কাঁচের ঘরে।আজকাল কেউ বিশেষ বুথে আসেনা,নাহলে এতক্ষনে কাঁচের দরজায় ধাক্কা শুরু হয়ে যেত।
নিজেকে সামলে কাঁচের ঘরটা থেকে বেরিয়ে আসে মানি।পরশু ফিরেছে ও দিল্লি থেকে।ভেবেছিল এতদিনে উৎসবের রাগ পরে গেছে,ফিরে দেখা করে বুঝিয়ে বললে বুঝতে পারবে ও কেন চাকরিটা করতে চাইছে।আর এটাও ভেবে রেখেছিলো উৎসব রাজি না হলে ও জয়েন করবে না চাকরিটা,কারণ রাজ্য সরকারের একটা চাকরিও প্রায় হয়ে গেছে,শুধু জয়েনিং লেটার আসার অপেক্ষা।
ও শুনেছিল মন দিয়ে পড়লে আর মনের জোর থাকলে একটা সময়ের পর চাকরি যখন আসে এরকম পরপর ই আসে।কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি সবসময় ওর প্রথম পছন্দ ছিল সবার মতোই।
এখন মনেহচ্ছে ওর এত প্ল্যান,এত চিন্তা সবটাই বৃথা।কত সহজ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাওয়া।ও বোকা তাই এতদিন খালি ভেবেছে কীকরে সম্পর্কটা কে পরিণতি দেওয়া যায়।বারবার একটাই ভয় তাড়া করেছে ওর তরফ থেকে যদি বেড়িয়ে আসতে হয় পরিবারের চাপে।শুধু চিন্তা করেছে তখন উৎসব কী করে নিজেকে সামলাবে! আজ নিজেকে বড্ড বোকা মনে হচ্ছে।উৎসব ওকে ছাড়া দিব্বি ভালো থাকতে পারবে।একটা বোকা কারণ দেখিয়ে কী সহজে বেরিয়ে গেল সম্পর্ক ছেড়ে।বুঝতেও চাইলো না মানিনী ওকে কতটা ভালোবাসে বলেই ওর সাপোর্ট হতে চেয়েছিল।উল্টে ওকে শুধু না ওর বাবার উদ্দেশেও অপমানজনক মন্তব্য করে গেল।
মানির পা যেন চলছিল না।শুধু উৎসবকে ফোন করতে ও বাজারে এসেছিল।ওকে ব্লক করার কথা উৎসব বললেও ও সিরিয়াসলি নেয়নি বলে মাথাতে ওই চিন্তাটাও ছিলোনা।শুধু ভাবনায় ছিল উৎসবের রাগ ভাঙানোর চিন্তা।কিন্তু সেটা যে এত সহজে শেষ হয়ে যাবে ও ভাবতেও পারেনি।
শরীরটা যাহোক করে টেনে বাড়ি অবধি নিয়ে আসে ও।বাবা দোকানে,তাই নিজেই চাবি খুলে বাড়ি ঢোকে।বাবা দুপুরে বাড়ি আসেনা এখন,তাই দুপুরের খাবার ও একাই খায় বারোটা নাগাদ।
আজ আর খাওয়ার ইচ্ছা টুকু হলোনা।ডাইনিং রুমের সিঙ্গেল সোফায় শরীরটা ছেড়ে দিলো মানি।গলাটা বড্ড শুকিয়ে গেছে,জিভ যেন পেটের ভিতর টেনে ধরছে।তাও উঠে গিয়ে জল খেতে যাওয়ার ইচ্ছা হলোনা।প্রচন্ড ভারী মাথাটা এলিয়ে দিলো সোফার ওপর।মনেহল ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসছে।ঝিম ধরা মাথা নিয়ে চোখ বুজে বসে রইল।কিছুক্ষন পর চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে এলো জল।বড্ড কষ্ট হচ্ছে।বুকের মধ্যে যেন ঝড় বইছে।ওর পড়াকু জীবনে ভালোবাসা একবারই এসেছিল উৎসবের হাত ধরে।বুদ্ধিদীপ্ত উৎসবকেই জীবন সঙ্গীর জায়গায় বসিয়েছিল মানিনী,অন্য কোনো অপশন ভাবেওনি অবচেতনে।নিজের পড়াশোনা আর বাবা ছাড়া মনের মধ্যে শুধু ওই ছেলেটাই থাকতো দিনের বেশিরভাগ সময় জুড়ে।
ওদের সম্পর্কটা প্রথম থেকেই ছিল উল্টো ধরণের।ও ছিল বুঝদার,বাস্তববাদী আর অন্যদিকে উৎসব ছিল উল্টোটা।প্রচন্ড আবেগী উৎসবকে ও সবসময় আগলে রাখতো।অভিমান করলে,ঝগড়া হলে মানি সবসময় আগে রাগ ভাঙাত উৎসবের।শেষে এটাই যেন নিয়ম হয়ে গেছিল।ও নিজে কখনো নিজের নামের সম্মান রাখতে অভিমান ধরে রাখতে চাইলে কথা বন্ধের সময় বাড়তে থাকতো।মানি দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে করতে বুঝতো উৎসব এবারেও আগে কথা বলবে না।বাধ্য হয়ে মানিনী আগে সন্ধির হাত বাড়াতো প্রতিবার।
চুপ করে বেশ অনেক্ষন বসে থাকার পর জোর করে উঠে পড়ে মানিনী মনের জোরে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় একটা বাজে।কিন্তু খাওয়ার ইচ্ছা এতটুকু নেই।ডাইনিং টেবিলের দিকে তাকিয়ে কী ভাবে।তারপর এগিয়ে যায় টেবিলের দিকে।
কাঁচের জগ থেকে গ্লাসে জল ঢেলে ঢকঢক করে দুগ্লাস জল খায় ও।তারপর নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে।ওর ডিপ্রেশনের একমাত্র ওষুধ ঘুম।মন খারাপ হলেই ও ঘুমিয়ে পড়ে সেই ছোট থেকে,আজও তার অন্যথা হয়না।
“তুই ইদানীং একটু চুপচাপ হয়ে গেছিস অয়ন।বাড়ি থেকে ফেরার পরও সপ্তাহ খানেক ঠিক ছিলি।তারপর কী যে হলো তোর?” অয়নের সেই প্রথম দিন থেকে কলিগ সৌরভ।গত তিনবছর কখনো ওকে এতটা চুপচাপ দেখেনি ও।
এমবিএ করে যখন চাকরিতে ঢোকে ওরা, দুজনের স্যালারি বলার মত কিছুই ছিলোনা,জাস্ট মাস চলে যেত।তখনও অয়নকে বরাবর হৈচৈ করতে দেখেছে।বাড়ি যাওয়ার আগে নিজের চার বছরের পুরনো বান্ধবীর বিয়ের খবরও দিয়েছিল হাসতে হাসতেই।অবাক সৌরভ বলেছিল,”খারাপ লাগছে না তোর? তুই তাহলে এই সময় ফিরিসনা।মাস খানেক পরে যাস”।
হাসতে হাসতে অয়ন বলেছিল,”দূর।আমি কি এখন বিয়ে করতে পারতাম নাকি? ওই বা কত বছর আর অপেক্ষা করবে?হয়তো আর দুবছর পর বিয়ে করার উপযুক্ত হয়ে যেতাম, কিন্তু ওর হবু বরের সমান হতে এখনো দশ বছর লেগে যাবে।প্রথম শুনে খারাপ লেগেছিল,তারপর ভেবে দেখলাম ও ভুল তো কিছু করেনি।বেটার সুযোগ নেওয়ার অধিকার সবার আছে”।
সৌরভ ওর শেষ কথাতে এত অবাক হয়েছিল কিছু বলতে পারেনি আর।ফেরার পর ও নিজেই বলেছিল,”জানিস নিজেকে খুব হালকা লাগছে।মোমের মত মেয়েদের জন্যে ডাক্তার ছেলেই বেস্ট।কোথায় ওর বর, আর কোথায় আমি।ও বাবার আদুরে মেয়ে,ওর জন্যে সাজানো সংসার বেস্ট।আমার জন্যে লড়াকু,কষ্ট সহ্য করে বড় হওয়া মেয়েই ঠিক আছে।যার চোখে কিছু করার তাগিদ থাকবে।আমার আর কোনো খারাপ লাগা নেই মনে”।
সৌরভ আর কথা বাড়ায়নি।এক সপ্তাহ পর থেকে লক্ষ করেছিল একটা নতুন অভ্যেস হয়েছে অয়নের।মাঝে মাঝেই পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে।
সবে অয়নকে সৌরভ কিছু বলতে যাবে অয়নের ফোন ভাইব্রেট করতে শুরু করলো।পকেট থেকে ফোন বের করে অচেনা নম্বর দেখে নড়েচড়ে বসলো যেন অয়ন,মুখটা কি একটু উজ্জ্বল হলো?
কিন্তু মুখের সেই আলো নিভে যেতে বেশিক্ষন সময় নিলনা।
ক্রেডিট কার্ড ওয়ালাদের ফোন।”শালা মাস চালাতে প্যান্ট ঢিলে হয়ে যায়,আর ওরা খালি ক্রেডিট কার্ড ধরানোর জন্যে রেডি হয়ে বসে থাকে।”
ফোন কাটার পর ওর বিরক্তি চোখে লাগে সৌরভের।
“তুই তো আগে এনজয় করতিস।অকারণে বকবক করতিস,বিশেষ করে অফ টাইমে ফোন এলে।আজ তোর কী হলো?” অবাক হয় সৌরভ।
“হমম।আসলে বয়স বাড়ছে।নিজেকে সংযত করা দরকার।বেশি বাচাল কে কেউই হয়তো গুরুত্ব দেয়না আলাদা করে।সময়ের অতলে হারিয়ে যায় বেশি বকবক করা ছেলে মেয়ে গুলো।কেউ বোঝেনা তাদের মনের কথা।তাদের অপেক্ষাই সার হয়”।
চমকে তাকায় সৌরভ অয়নের দিকে।তাহলে কি নিজের গার্লফ্রেন্ডকে মনে করে কষ্ট পাচ্ছে ছেলেটা?
কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই উঠে চলে যায় অয়ন সৌরভের পাশ ছেড়ে।
“ওই দাঁড়া কোথায় চললি? আমিও যাবো।আধ ঘন্টাও তো হয়নি আজ।…”,সৌরভ চেঁচাতে চেঁচাতে ছোটে ওর পিছনে।
হৈহৈ করা,জমিয়ে রাখা,নিজের কষ্ট আড়াল করে রাখতে জানা ছেলেটা আজকাল একটু যেন খিটখিটে হয়ে গেছে।চিন্তা হয় সৌরভের।বাউন্ডুলে ছেলেটার ওপর একটা মায়া পড়ে গেছে।একসাথে থাকা,খাওয়া, অফিস…তাও যেন আজকাল ছুঁতে পারছে না ওকে।
“আমিই বোকা।এত বছরের চেনা প্রেম অন্যের হাত ধরে চলে গেল,কিছু বলতে অবধি পারলাম না আর একটা অচেনা মেয়ে আমায় মনে রাখবে…”,নিজের মনে বিড়বিড় করতে করতে নিজের টাওয়ারের দিকে দ্রুত হাঁটতে থাকে অয়ন,সৌরভের চিৎকার কানে পৌঁছলেও মাথায় পৌঁছয় না।খালি মনে ভাসতে থাকে একটা করুন মুখের ছবি।
ক্রমশ…
5 comments
Darun laglo 💖
khoob bhalo lagche
Ei toxic relationship chena khub shokto…prothome mone hoy etao valobasa I…bujhte deri hoye jay..
khoob bhalo lagche
নতুন করে পড়তে ভীষণ ভালো লাগছে