তুমি কেন বোঝোনা – দ্বিতীয় ভাগ

by Tamali


(এই গল্পের চরিত্র ,ঘটনা সবই লেখিকার কল্পনাপ্রসূত।এর সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই)
“আরে আরে উঠনা।শুয়ে থাকো,ডাক্তারবাবু ইনজেকশন দিয়ে গেছেন।তোমার রেস্ট দরকার।..”,রাজীবের কথা গুলো শুনেও না শোনার ভান করে অহনা চোখ দিয়ে রুক্মিণী কে খুঁজতে থাকে।রাজীব বুঝতে পারে অহনার মনের কথা ,তাই ওর প্রতি উপেক্ষা কে গুরুত্ব না দিয়েই বলে,”রুক্মিণী একটু কিচেনে আছে।আমাদের বাবা মা দেশের বাড়ি গেছেন কদিন,তাই কিচেন রুকু কেই সামলাতে হচ্ছে কদিন।তুমি বিশ্রাম নাও আমি ওকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”এবারও অহনার তরফ থেকে রাজীবের কথার কোনো উত্তর আসেনা,এমনকি সৌজন্যমূলক ধন্যবাদও না।উল্টে অহনা মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকে।রাজীব অপলক দৃষ্টিতে কিছুক্ষন অহনার দিকে তাকিয়ে থাকে কিছু শোনার প্রত্যাশায়,তারপর যখন বোঝে এখনো অহনা একইরকম উদাসীন ওর ব্যাপারে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে যায়।আর অহনা নিঃশব্দে গড়িয়ে আসা দুচোখের জল ঝরে যেতে দেয়,পাছে মুছতে গেলে সামনে বসে থাকা মানুষটা টা বুঝে যায়।একসময় এই মানুষটাই ওর মুখ না দেখেও চোখের জল দেখে ফেলতো এভাবেই।কিন্তু আজ তার কোনো অধিকার নেই অহনার চোখের জলের উপর।কিছুক্ষন পর রুক্মিণী আসে অহনার বর্তমান রুমে হাতে একটা বড় গ্লাস দুধ আর বাটার টোস্ট নিয়ে।

“কিরে ঘুম ভাঙল?সারাদিন তো পেটে কিছু পড়েছে বলে মনেহয় না।নে এইটুকু এখন খেয়ে নে।..ডাক্তার কাকু বলেছেন তোর প্রেসার খুব লো।আর রেস্টের দরকার বেশ কিছুদিন।তুই তো আমায় কিছুই বলিসনি কদিনের জন্যে বা কেন আসতে চেয়েছিলি, আর আমিও জানতে চাইনি।কিন্তু এখন বলছি বেশ কিছুদিন তুই এখান থেকে যেতে পারবিনা।তোর বর বা আর যাকে জানানোর জানিয়ে দে।আমি তোকে কিছুদিন ছাড়বনা।..”,রুক্মিণী নিজের মনের কথা বিনা বাধায় বলতে থাকে।

“রুক্মিণী তোর দাদা যে তোর কলেজেই সিনিয়র ছিল কোনোদিন বলিসনি তো?”অহনা এতক্ষন চেপে রাখা কথাটা বলে হাঁফ ছাড়ে।থতমত খেয়ে যায় রুক্মিণী।কি বলবে বুঝতে পারেনা।একটু ভেবে বলে,”কোনোদিনও তো তোর সাথে আমার দাদা কে নিয়ে কথা হয়নি।আর দাদা তোকে মনে রেখেছে আমি নিজেও অনেক পরে জেনেছিলাম…দাদার ডাইরি লুকিয়ে পরে।”কথাটা শেষ করে ও অহনার মুখের দিকে তাকায় ওর মনটা পড়তে,আর ওর চোখ এড়ায়না অহনার অভিব্যক্তি…ওই কথায় অহনা চমকায়।কি আছে রাজীবের ডাইরিতে ওকে নিয়ে!কিন্তু রুক্মিণী কে জিজ্ঞেস করার সাহস হয়না,কেন যেন ওর মনে হয় একজোড়া কান ওদের কথা গুলো শুনছে দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে।প্রচন্ড অভিমানে,আত্মসম্মানে ও ঋষির সংসার ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে,আর কোনোদিন ফিরবে কিনা ভাবেনি,কিন্তু তাই বলে অতীত সে যত ভালোই হোক এই সময় ওর সামনে এসে দাঁড়ালে তাকে ও কোনো ভাবেই ভালো ভাবে গ্রহণ করতে পারবেনা।কিন্তু ও এখন কি করবে?ভেবেছিল রুক্মিণীর কাছে থেকে নিজের জন্যে কিছু করবে,শান্তিনিকেতনের মতো জায়গায় ওর শিক্ষাগত যোগ্যতার সঠিক মূল্যায়ন করতে পারবে,কিন্তু এখানে থাকলে অন্য একজনের অনুকম্পা তো থেকেই যাবে ওর জীবনে।আসলে এটা তো রাজীব বোসের বাড়ি,যাকে অহনা কোনভাবেই নিজের জীবনের সাথে জড়াতে চায়না।আর কিছু মাথায় আসেনা,এমনিতেই গত রাত থেকে ওর মাথা বিশেষ কাজ করছেনা।বারবার ঋষির খোঁটায় মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ছেড়েছিল,কিন্তু কোনো উদ্দেশ্য ছিলোনা। আসলে ও বোঝেনি এভাবে নিজের পায়ের তলায় মাটি শক্ত করা খুব কঠিন।কিছু না ভেবে শুধু বারবার দাদাভাই এর মুখটা মনে পড়ে,মনে পড়তে থাকে অতীতটা,ওর শৈশব অতীতটা,যা সাত বছর আগে ওকে টেনে ধরেছিল নিশ্চিত সুন্দর এক ভবিষৎ থেকে।সেদিন যদি ও পেরে থাকে,তাহলে আজ কোনোভাবেই সেই ভুল ও করবেনা।


বেলের আওয়াজে ঋষির ঘুমটা ভেঙে যায়।লাফ দিয়ে খাটে উঠে বসে।মাথাটা কে না খাটিয়ে সোজা ছোটে দরজা খুলতে।কিন্তু দরজা খুলে আবার একরাশ হতাশা ওকে আষ্টেপৃষ্টে চেপে ধরে।দুধওয়ালা দাঁড়িয়ে।ক্লান্ত অবসন্ন দেহটা টেনে ও ফিরে আসে রান্নাঘরে দুধের পাত্রের খোঁজে।”কাল দাদা কোথায় ছিলেন,বেল বাজিয়ে বাজিয়ে শেষে চলে গেলাম।…বৌদি কি নেই নাকি?”দুধ ঢালতে ঢালতে দুধওয়ালা শ্যামলের কৌতুহলি প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে ঋষি বলে,”শ্যামল আমরা কদিন থাকবোনা।তুমি কাল থেকে দুধ দিওনা আর।আমি আবার ফোন করলে তারপর আবার দিও।”অবাক শ্যামল কিছু না বলে শুধু ঘাড় নেড়ে নিজের কাজ শেষ করে চলে যায়।আগেরদিন থেকে কিছু না খাওয়া,এমনকি অফিসের ড্রেস না খুলে শুয়ে পড়া ঋষি ক্লান্ত পায়ে রান্নাঘরে গিয়ে দুধ গরম করে আগে এক কাপ কফি বানায়।যদিও কফি ওর খুব একটা সহ্য হয়না,কিন্তু চা বানানোর হ্যাপা এই সকালে ভালো লাগেনা।কফি মাগ হাতে নিজেদের ছোট্ট ব্যালকনিটায় গিয়ে দাঁড়ায়।কফিতে চুমুক দেওয়ার সাথেই দুশ্চিন্তা গুলো আবার ফিরে আসে।ঘরে ঢুকে ফোনটা নিয়ে আবার রোদে গিয়ে দাঁড়ায়।ফোন আনলক করে মাথাটা একবার ঘুরে যায়…অহনার দাদার ১০টা মিসড কল!!সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে নিলয়ের নম্বরে।”হ্যাঁ দাদা ফোন করেছিলেন?” ঋষির ফোন দুবার রিং হতেই নিলয় রিসিভ করে।কিন্তু নিলয় কিছু বলার আগেই ঋষি প্রশ্নটা করে বসে।

“আমি শ্রীলেখাদি বলছি ঋষি।অহনা কোথায়?”,অহনার বৌমনির গম্ভীর গলা ঋষিকে বুঝিয়ে দেয় সত্যিটা ওরা জেনে গেছে।তাই নিজেকে লুকোবার কোনো চেষ্টা না করে ও বলে,”সুজাতা তোমাদের ফোন করেছিল?”

“না অহনা”,শ্রীলেখা কাটা স্বরে উত্তর দিয়ে ঋষির উত্তরের অপেক্ষা করতে থাকে।কিন্তু শ্রীলেখার কথায় ঋষি এতটাই চমকে যায় যে বাঁ হাতে ধরে থাকা কফির কাপ কেঁপে কফি পরে যায় একটু।সঙ্গে সঙ্গে মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হয় না।কিছুটা সময় নিয়ে ও বলে,”কি বললো অহনা?”

“বলবো।তার আগে তুই বল কি হয়েছিল তোদের মধ্যে?আর কাল রাতে নিলয় কে তুই এত বড় কথাটা লুকোলি কেন?”,শ্রীলেখার স্বরে বিরক্তি ঝরে পড়ে।কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো জবাবের বদলে শুনতে পায় ঋষির দীর্ঘশ্বাস।শ্রীলেখা ওকে সময় দেয় একটু,ও বুঝতে পারে ঋষিও খুব ঘেঁটে আছে।”আমি দাদার থেকে নম্বর নিয়ে সুজাতা কে ফোন করেছিলাম।ও বললো অহনা ট্রেনে করে কোথাও গেছে,আর বলে গেছে ও স্বেচ্ছায় যাচ্ছে।পুরো ঘটনাটা আমায় এতটা চাপ দেয় যে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।আজ সকালে আমি তোমাদের ফোন করতাম।কিন্তু অহনা এখন কোথায় আছে প্লিজ বলবে?”ঋষির গলার উদ্বেগ ওর মনের উত্তেজনা কে প্রকাশ করে।

“অহনা ওর কোনো কলেজ বান্ধবীর বাড়িতে আছে,তবে এখানে নয় শান্তিনিকেতনে।কিন্তু আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি ঋষি তোর বিয়ে করে বউ বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে,রাতেও ফেরেনি।আর তুই তার বান্ধবীর থেকে সামান্য ইনফরমেশন পেয়েই তাকে খোঁজার চেষ্টা না করে,কাউকে কিছু না জানিয়ে চুপচাপ রাত কাটিয়ে দিলি?সুজাতা যেটুকু বলেছিল তার থেকে কোনো ভাবেই প্রমান হয়না অহনা সুরক্ষিত ছিলো।তুই পুলিশে না জানাস আমাদের অন্তত জানাতে পারতিস।”অল্প থেমে শ্রীলেখা আবার বলে,”শুধু আমার ভাই বলে নিলয় তোর সম্বন্ধে ন্যূনতম খোঁজ না নিয়েই নিজের কলজের টুকরোকে তোর হাতে তুলে দিয়েছিল,কিন্তু তুই…”,শ্রীলেখার কথা থেমে যায় ঋষির চিৎকারে।

“কি কি আমি?!!বলো কি আমি?হ্যাঁ দোষ আমার আছে…আমি অনেক উল্টোপাল্টা বলেছিলাম ওকে।কিন্তু সেসব রাগের মাথায়।তার জন্যে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোনো দরকার ছিলোনা।ঠিক আছে আমার কথায় রাগ অভিমান কষ্ট যাইহোক তোমাদের ওখানে যেতে পারতো।এতটা বাড়াবাড়ি করার কি ছিল?সুজাতার বাড়িও না একেবারে কলেজ বান্ধবীর বাড়ি।তারা নিশ্চই সবটা জানে।ঘরের কেচ্ছা বাইরে বের করার কোনো দরকার ছিল কি??”অহনার জন্যে ঋষির চিন্তা ওর অবচেতনের ক্ষোভের  আড়ালে মুখ লুকোয়।অবচেতন অহনার বিরুদ্ধে এখনো বিদ্রোহ করে যায়,আর দুশ্চিন্তা গুলো তার আড়ালে লুকিয়ে মজা দেখে।

“শাট আপ ঋষি।আমি অহনা কে চিনি,তুই ওর সম্মানে লাগার মতো কিছু না বললে ও এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।ও কতটা অভিমানী আমি জানি।একমাত্র অভিমানের কারণেই ও এরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে।নাহলে বিয়ের দুবছর পর ও কেন সংসার ছেড়ে বেরিয়ে যাবে,এমনকি আমাদের এখানেও আসবেনা।ওর দাদাভাই আমি অনেক বোঝানোর পর,প্রায় কান্নাকাটি করার পর ও শুধু এটুকুই বলেছে কোথায় কার কাছে আছে,তাও ডিটেইলস কিছু বলেনি।এমনকি ও নিজের ফোন অবধি নিয়ে যায়নি।কতটা অভিমান ওর হলে ও এধরণের সিদ্ধান্ত নেবে আমি জানি”,শ্রীলেখার গলা প্রায় ধরে যায়।অহনা কবে কিকরে ওর আত্মার আপন হয়ে উঠেছিল ও নিজেও জানেনা, কিন্তু অহনা ওকে আপন করে সংসারটা ওর হাতে তুলে দিয়ে যখন ‘বৌমনি’ বলে ডেকেছিল সেই ক্ষন টা আজও ওর মনে তাজা।অহনা ফোন করেছে শুনে ওর জন্যে দুশ্চিন্তা কমে গিয়ে চব্বিশ ঘন্টা আগের রাগটা আবার ঋষির মাথাচাড়া দেয়।বিশেষ করে নিজের বিরুদ্ধে ধেয়ে আসা অভিযোগ গুলো ওর মধ্যে আবার রাগকে প্রতিরোধ আকারে গড়তে থাকে।ওর মনে হয় অহনা পুরো ব্যাপারটাই পরিকল্পনা করে ওকে জব্দ করতে করেছে।সেই রাগের বহিঃপ্রকাশ হয় ওর কথায়,”তাহলে আর কি তোমার ননদ ঠিক,আর আমি যখন দোষী আমার বিরুদ্ধে থানায় যাও।আইনের রাস্তা তো খোলাই আছে ।আমায় ফোন করে সময় নষ্ট করছো কেন?আর হ্যাঁ ঝগড়া সব সংসারে হয়,তার জন্যে বাড়ির বউ সংসার ছেড়ে বেরিয়ে যায়না।আর স্বামীর ওপর রাগ হলে বাপের বাড়ি যায়,কিন্তু তোমার ননদ আবার বিশেষ কিনা তাই…”,বিদ্রুপ আর রাগ ঝরতে থাকে ঋষির কথায়।
ওপাশে এবার শ্রীলেখার বদলে শোনা যায় নিলয়ের গলা,”ঋষি তোমার দিদির কথায় উত্তেজিত হয়োনা।তোমার দুজনেই তো ওর খুব প্রিয় আর আপন তাই কি বলতে কি বলেছে মনে নিওনা।আমি অহনা কে বুঝিয়েছি।আবার ফোন করলে বুঝিয়ে বলবো যত তাড়াতাড়ি ও ফিরে আসে।অনেক জিজ্ঞেস করে ঠিকানা বললো না,নাহলে আমি আজ নিজেই চলে যেতাম।তুমি শান্ত হও, আর চিন্তা করোনা।…যাও অফিস যাও।আমি এদিকটা দেখছি”,নিলয়ের কথা শেষ হতেই ঋষি “রাখছি” বলে আর দ্বিতীয় কোনো কথা না বলে ফোনটা মুখের ওপর কেটে দেয়।ফোন রেখে নিলয় শ্রীলেখার ওপর রাগে ফেটে পড়ে।”কোথায় কি বলতে হয় এখনো শেখনি।ও তোমার ভাই পরে,আগে আমার বোনের স্বামী।দোষ তো অহনার কম নয়,এভাবে ও বাড়ি ছেড়ে চলে যায় কোন সাহসে?আজ যদি ঋষি ওকে আর গ্রহণ না করে কি করবে ও?এই জেদ, রাগ কোথায় থাকবে?ছেলেরা বাইরে বাইরে ঘোরে, রেগে দু একটা কথা বললে সেটা ধরে এত বড় সিদ্ধান্ত কেউ নেয়?আজ যদি কোনো বড় একটা ক্ষতিও হয়ে যায়,কে আশ্রয় দেবে ওকে?…”।

“আমার ভাবতে অবাক লাগছে,যে  বোনকে তুমি কোলে পিঠে মানুষ করেছ তাকে এক ফোঁটাও চেননা।তোমরা আসলে সব পুরুষ সমান।সত্যি কথা কি জানো,অহনার মতো মানিয়ে চলার চেষ্টা আমি খুব কম মেয়ের মধ্যে দেখেছি।কতটা আঘাত পেয়ে ও এই কাজ করেছে আমি বুঝছি।আর তুমি নিজের প্রানের প্রিয় বোনের আগেও নিজের সম্মানের কথা ভাবছো।বিশ্বাস কর আমি বিশ্বাস করতেও পারছিনা।”শ্রীলেখা গর্জে ওঠে নিলয় এর কথায়।কিন্তু নিলয়ের কোনো ভাবান্তর ঘটেনা।ও একটা অগ্নিদৃষ্টি হেনে অন্য ঘরে যাওয়ার আগে শুধু বলে যায়,”এবার বুঝতে পারছি কার প্ররোচনায় আমার ভীতু বোনটা জীবনের এতবড় সিদ্ধান্ত না ভেবেই নিয়ে নিল।আমার দুর্ভাগ্য এত বছরেও তোমায় আমার পরিবারের সংস্কার শিখিয়ে উঠতে পারলামনা।তোমার গুন দেখে,তোমার বাবার অবস্থা বিবেচনা করে আমার পরিবারে এনেছিলাম যাতে আমার বোনটা তোমার গুন গুলো পায়,কিন্তু তোমার ঐ  নারীবাদী কথাবার্তা ওকে প্রভাবিত করবে ভাবিনি।”

শ্রীলেখা এবার অবাক হয়,”কি হয়েছে তোমার নিলয়?অহনা কোথায় কেমন আছে…কি পরিস্থিতিতে সংসার ছেড়েছে কিছু না জেনেই তুমি এসব কি বলছো?আমার নিজের দূরসম্পর্কের ভাইকে আমি নিজেই ঠিক করে জানিনা,আর তুমি তার হয়ে অহনার বিরুদ্ধে ভাবছো?তুমি কি ভুলে গেছো শুধু তোমার কথায় তোমায় ত্যাগ করতে পারবেনা বলে এই মেয়েটা নিজের প্রথম ভালোবাসা কে অঙ্কুরেই বিনাশ করে দিয়েছিল?সেই ছেলেটা সব দিক দিয়ে ঋষির থেকে বেস্ট ছিল কিন্তু শুধু তুমি না বলেছিলে বলে অহনা….”,শ্রীলেখার কথা চাপা পড়ে যায় নিলয়ের চিৎকারে,”তুমি তোমার বাজে বকাটা বন্ধ করবে?!!আমি সব সময় যা করেছি অহনার ভালোর জন্যই করেছি।আর আজও যা ভাবছি ওর ভালোর জন্যেই ভাবছি,আর ভবিষ্যতেও যা করবো ওর ভালোর জন্যেই করবো।সংসারে মেয়েদের একটু মানিয়ে নিতে হয়,আর অহনা সেটা ভালো করে জানে।…”।

“হ্যাঁ তুমি নিজে এটা চিন্তা কর অহনা সব জেনেও কেন ঘর ছেড়েছে।তুমি তো ওর দাদা তুমি তো জানো ও কতটা আত্মসম্মানী।ওর কোথায় আঘাত লাগাতে ও এতো বড় সিদ্ধান্ত নিলো?…কি বলছিলে তুমি ওর ভালো চাও??মিস্টার নিলয় গাঙ্গুলী আমি সেদিনও বলেছিলাম আজও বলছি তুমি ওর ভালো চাইলে মিথ্যে জাতের অহংকারে সেদিন অহনার পছন্দকে গলা টিপে মারতে না।আর হ্যাঁ এবারও ওর ভালো চেয়ে সবটা না জেনে বুঝে ওকে জোর করে ঋষির কাছে পাঠাবে আর ও ওখানে গিয়ে আবার গুমরোবে,হয়তো বা ইনসিকিউরিটি থেকে একাকিত্বের কারণে কোনোদিন নিজেকে শেষও করে ফেলবে।তোমার ওপর বিশ্বাসের অভাবেই না ও এখানে না এসে অজানা বান্ধবীর বাড়ি গিয়ে বসে আছে.. ।”একটানা কথা গুলো বলে আর এক সেকেন্ডও না দাঁড়িয়ে নিলয়ের আগে শ্রীলেখাই ওই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।আর নিলয় নিজের অগ্নিদৃষ্টি আর ধরে রাখতে পারেনা,অসহায় ভাবে নিজের মাথাটা দুহাতে ধরে ওই ঘরের মধ্যে রাখা একটি চেয়ারে বসে পড়ে।

“কিরে অহনা এখানে কি করছিস?”খুঁজতে খুঁজতে অহনার ঘরের লাগোয়া বারান্দায় এসে ওকে খুঁজে পায় রুক্মিণী।ঠান্ডার সময় এই ঘরের ব্যালকনিতে দুপুরের পর ওরা বিশেষ কেউ পা রাখেনা,কারণ এদিকটায় রোদ বিশেষ আসেনা সারাদিনে।সেখানেই একটা চেয়ারে জড়সড় হয়ে বসে দূরের দিকে অপলকে তাকিয়ে ছিল অহনা।রুক্মিণীর কথায় ও অল্প চমকে তাকিয়ে মৃদু হাসে।

“এই একটু বসে ছিলাম,ভালো লাগছিলো এই নির্জনে চুপ করে বসতে।তোদের বাড়িটা খুব সুন্দর রে,আসলে জায়গাটাও এত সুন্দর”।অহনার কথায় রুক্মিণী হাসে,তারপর ওর দিকে ফিরে বলে,”ভিতরে চল অহনা,ডাইনিং স্পেসে।চা দিয়েছি।”একটু গুটিয়ে যায় অহনা রুক্মিণীর কথায়, ভিতরে গেলেই তো আবার রাজীবের মুখোমুখি হতে হবে।একটু আগে ওর ফেরার আওয়াজ পেয়েই ব্যালকনিতে এসে বসেছিল।মাঝে দুদিন কেটে গেছে কিন্তু জীবনের যে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ও সংসার ছেড়েছিল এখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।এই দুদিন খালি ভাবছে কি করবে?যদি শুরু করে কিকরে কোথা থেকে শুরু করবে।এখানে আর থাকা সম্ভব না,যদিও সেদিন রাতের পর প্রায় আটচল্লিশ ঘন্টা কেটে গেছে রাজীব নিজে থেকে ওর সামনে অবধি আসেনি।কিন্তু এভাবে ওর বাড়িতেই থেকে ওকে উপেক্ষা করা সম্ভব না।আজ সাতবছর যাকে জোর করে ভুলে থেকেছে সে যে এভাবে ওর জীবনের খবর সব রাখতো অহনা দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি।কলেজের প্রথমদিনের ক্রাশ যে একদিন ওকেই পছন্দ করে প্রপোজ করতে চাইবে অহনা সেদিন আশা করেনি।সিনিয়র দাদা…সুপুরুষ শুধু না শান্ত,বিনয়ী,সবার প্রিয় অথচ মেয়েদের থেকে শত হস্ত দূরে থাকা ছেলেটা কে যেকোনো মেয়ের ভালো লাগবে,কিন্তু সেই ছেলেটাই শুধু ওর লেখা পড়ে ওর প্রেমে পড়ে যাবে এটা অহনার স্বপ্নাতীত ছিল।ভাবলে হাসি পায় যে লেখার জন্য রাজীব ওর প্রেমে পড়েছিল আজ সেই লেখাই কোথায় হারিয়ে গেছে,আর তারা অহনার মনেও আনাগোনা করেনা।রাজীবকে প্রত্যাখ্যান করার মতো মনের জোর ছিলোনা বলে সেদিন অহনা রাজীবের ডাকে সাড়া দিয়ে দেখা অবধি করতে যায়নি,কিন্তু তারপর থেকে ওর লেখাগুলোও যেন ওকে প্রত্যাখ্যান করে অনেক অনেক দূরে চলে গেছে।ওর সৃষ্টিশীল মন তাই হয়তো ইদানীং নতুন নতুন সেলাইয়ের নকশা তুলে এত আনন্দ পায়।রুক্মিণীর কথায় আবার ঘোর কাটে অহনার,”কিরে চল ডাইনিং স্পেসে,চা খাবিনা?”অনিচ্ছা সত্ত্বেও ও পা বাড়ায়,কিন্তু ডাইনিংয়ে এসে ও তাকিয়ে দেখে না রাজীব আসেনি।হঠাৎ ঘড়িটার দিকে নজর যায়,ঋষি আর কিছুক্ষন পর বাড়ি ফেরে,কে জানে এই কদিন কি খাচ্ছে?ওকে কি সামান্য হলেও মিস করেছে?না রুক্মিণী কে এখনই বলবে কাল ফেরার কথাটা।আগে দাদাভাই এর কাছে যাবে,ওখানেই থাকবে।তারপর ঋষি নিতে এলে ভাববে…কিন্তু ঋষি সত্যি ওকে আর নিতে আসবে তো?সত্যি কি ঋষি ওকে কোনোদিনও ভালোবেসেছিল,বা হয়তো ও ঋষি কে?এই দুদিনে কোনো ভাবে যোগাযোগের চেষ্টাও তো করলো না।ও তো দাদাভাই কে রুক্মিণীর নম্বর থেকে ফোন করেছিল,না দাদাভাই আর না ঋষি এই দুদিন কেউ ওর সাথে যোগাযোগ করেনি শুধু বৌমনি ছাড়া।ঋষির সাথে শেষ একবছর ওর কাটানো দিনগুলো ভাবলে ওর কেন জানেনা খুব দম বন্ধ লাগে।ঋষির ভালো লাগা,ঋষির অপছন্দ এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে অহনা যেন নিজের ভালো মন্দ সবটাই ভুলে গেছে।ও যে মাছ খেতে প্রচন্ড ভালোবাসতো,মাংস ডিম বিশেষ পছন্দ করতো না ঋষির মাছ না খাওয়া ওকে সেটা মনে করার সুযোগ দেয়নি।এমনকি ওর নিজের দাদার বাড়িতেও কখনো যখন খেতে যেত ঋষির পছন্দ মতোই রান্না হত,ওর নিজের দাদাভাইও ঋষির পছন্দ ভেবে বাজার করে আনতো।শুধু বৌমনি ও একা গেলে ওর পছন্দের খাবার তুলে দিত ওর মুখের সামনে যেদিন যেমন পারতো।অহনার এসব ভাবতে সত্যি এখন ক্লান্ত লাগে।ওর ভালোটা, ওর গুনগুলো শুধু ওর কাছেই রয়ে গেল,আর দোষটা বড় হয়ে চোখে পরতে লাগলো সবার।হঠাৎ ওর কানে এলো রুক্মিণী ওর দাদা কে ডাকছে চা খেতে, কিন্তু অহনা কে অবাক করে রাজীব বললো ও নিজের ঘরে বসে চা খাবে।অবাক রুক্মিণী নিজের মনে বললো,”কি হলো আজ দাদার!শত শরীর খারাপেও যে এই সময়টা নিজের ঘরে চা খায়না,সে আজ…”।যেন অহনার মনে মনের মধ্যে এসে কেউ ধাক্কা দিয়ে গেল।বলে গেল ভালোবাসা মানে নিজের সম্মানের সাথে সমঝোতা নয়..ভালোবাসা মানে সব প্রশ্নের উত্তর চাওয়া বা পাওয়া না..ভালোবাসা মানে ভালোবেসেই যাওয়া,কোনো প্রত্যাশা নয়।ভালোবেসে ভালোবাসার জন্যে সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়ার নামও ভালোবাসাই।তার জন্যে জোর করে অন্যের টা আদায় করার দরকার পড়েনা হয়তো,নিজের ভালো থাকাটাই আসল।রাজীব যেন অহনা কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করলো।অহনা ভাবলো ঋষিকে শেষ বার একবার বোঝার চেষ্টা করবে,আগামীকাল একবার ফোন করবে বাইরে গিয়ে।ওকে ফোন করেনি মানেই তো এই নয় ও ভালো আছে…হয়তো অভিমানে অনেক খারাপ আছে,ওকে খারাপ কথা বলার লজ্জায় ফোন করতে পারছেনা।ওকে জানতেই হবে কেমন আছে ঋষি একা?রাজীব নয় ঋষি ওর বর্তমান বলে অহনার মনে এখনো ছেঁড়া ছেঁড়া ঋষির আনাগোনাই চলছে।কাল ফোন করে ওকে বুঝতে হবে ঋষিকে ছেড়ে ও স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করবে নাকি ঋষির কাছে ফিরে গিয়ে নতুন করে সম্পর্ক শুরুর মধ্যে দিয়ে স্বপ্ন গুলো ওর সাথে সাজাবে।অহনা তো নিজেও বুঝতে পারেনি আজও ভালোবাসার অভাব কার দিক থেকে বেশি ছিল…ওর না ঋষির???নিজের ঘরে চা খেয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে ব্যালকনিতে এলো রাজীব।ওর বাইরের সৌন্দর্য্য বরাবরই মেয়েদের আকর্ষণ করেছে তাই হয়তো ও নিজে মেয়েদের রূপ নয় গুনে আকৃষ্ট হয়েছে।কলেজ অবধি প্রেম কি সেভাবে বোঝেনি কারণ খুব ভালো ছেলেদের দলে ও কোনোদিনই ছিলোনা।স্কুলে সায়েন্স নিয়ে পড়া ছেলে মেয়েরা ওদের মতো আর্টসের ছেলেকে পাত্তাও দিতোনা।শুধু বাংলার বরেনবাবু ওকে বারবার বলতেন রাজীব তোর লেখায় জাদু আছে,তুই অনেকদূর যাবি। ওই সময় এত মোবাইল ফোনের চল ছিলোনা  তাই বন্ধুত্ব গুলোয় শুধুই বন্ধুর ভালোবাসা থাকতো।যারা একটু আলাদা মনের ছিল তাদের সবাই এড়িয়ে চলত।কলেজে বাংলার রাজীব বিখ্যাত হয়ে গেল ওর ওর গলার স্বর,ভাষা শৈলী,ওর সৌম্য দর্শন,ওর নম্রতা আর সর্বোপরি পার্ট ওয়ান পরীক্ষায় ইউনিভার্সিটি টপ করার পর।অহনা নামের মিষ্টি মেয়েটা যখন কলেজে এলো রাজীব তখন সব মেয়েদের উপেক্ষা করে নিজের জগৎ,নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যস্ত।কিন্তু কলেজ ম্যাগাজিনে অহনার একটা লেখা ওকে প্রায় পাগল করে দিলো।লেখাটা আজও ওর মনে গেঁথে আছে,আর তারপর খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলো মেয়েটার একমাত্র ক্রাশ ও নিজেই,আর ওই কবিতাটাও ওকেই উদ্দেশ্যে করে অতো গভীর ভাবাবেগ দিয়ে লেখা।অহনাকে নজর বন্দি করতে করতে কলেজ ছাড়ার সময় এসে গেল,কিন্তু ততদিনে মানুষ অহনাও ওর মন কেড়ে নিয়েছে,লেখার মতোই ওর মুখের হাসিটাও ওকে পাগল করে দিয়েছে।রাজীব বেশি দেরি করেনি,ওর কলেজ জীবনের শেষদিন বেছে নিয়েছিল অহনাকে নিজের মনের কথা বলতে।কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করেছিল ও লাইব্রেরীর সামনে কিন্তু ও আসেনি।কেন আসেনি তা আজও রাজীবের অজানা।কিন্তু নিজের স্বভাব অনুযায়ী আর কোনোদিনও অহনার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়নি ও।সেদিন নিজের মধ্যে যে ভালোবাসাকে জড়িয়ে নিয়ে ফিরে গেছিল আজ সেই ভালবাসা মহীরুহ।অহনার বিয়ের খবর যেদিন পায় সেদিন ছিল রাজীবের জীবনে প্রিয়জন হারানোর শোক,ওর প্রানের প্রিয় দিদিমা কে আগুনে জ্বলতে দেখতে দেখতে ও নিজের মধ্যেটাও জ্বালিয়ে নিয়েছিল না পাওয়া ভালোবাসার কষ্ট।এরপর আর কোনো খোঁজ ও রাখেনি অহনার,শুধু নিজের মনে কলেজের অহনার ছবিটা ধরে রেখে তাকেই ভালোবেসে গেছে।আর কাউকে ওর মতো মনে হয়নি আজ পর্যন্ত।কিন্তু বিধ্বস্ত অহনাকে যেদিন নিজের বাড়ির দরজা খুলে ঢুকতে দেখলো বিশ্বাস করতে পারেনি নিজের চোখ কে।আর ওই চোখই ওকে বুঝিয়েছিলো অহনা ভালো নেই।অহনার মুখের সেই হাসি যা চোখ অবধি পৌঁছে যেত তাকে আজ তিনদিন ও দেখেওনি।আর বুঝেছিলো অহনা ওকে চিনতে চায়না, তাই জীবনে দ্বিতীয়বার অনেক কষ্টে ও সরিয়ে এনেছিলো নিজেকে।রুকু বিশেষ কিছুই বলতে পারেনি অহনার কথা,কিন্তু রাজীব বুঝেছিলো ওর না বলা কষ্ট গুলো।কিন্তু জোর করে এবারও ও ঢুকতে পারছেনা অহনার জীবনে।কি অধিকারে ঢুকবে!!শুধু বারবার দোষারোপ করছে নিজেকে।হয়তো ওর নীরব ভালোবাসাই অহনা কে সুখী হতে দিলোনা।নাহলে ভাগ্য কেন ওর কাছেই আবার অহনা কে এনে ফেললো?কেন ওর মনে সেই কষ্টটা,অস্থিরতাটা ফিরে এলো?বুকে পাথর বসিয়ে যাকে এই জন্মে আর পাবেনা মেনে নিয়েছিল কেন তার খারাপ থাকাটা বাস্তব হয়ে ওর সামনেই হাজির হলো?? ও তো চাইনি অহনা অসুখী হোক,কিন্তু ও চেয়েছিল অহনা কে সমস্ত ভালোবাসাটা দিতে।তাই কি ভাগ্য অহনা কে সুখে থাকতে দিলোনা।কিন্তু এখন রাজীব কি করবে?এ অহনা তো ওর মনের ছবির অহনা নয়….এর মাথায় অন্য কারোর দেওয়া সিঁদুরের ছোঁয়া..এর হাত জুড়ে ওর স্বামীর দেওয়া শাঁখা পলা…এর মন জুড়ে অন্য কেউ।তাই ওর চোখের কষ্টে রাজীব পুড়লেও ওর কাছে কখনোই যেতে পারবেনা,উল্টে ও জোর করে ঢুকতে গেলে অহনার জীবনও জ্বলে যাবে।কি করবে রাজীব?নিজের প্রানপ্রিয়া কে কষ্টে থাকতে দেখা যে কতটা কষ্টের আজ রাজীব বুঝতে পারছে।ওকে জ্বলতে দেখার চেয়ে নিজের জ্বলে যাওয়া হয়তো অনেক সহজ ছিল।নিজেকে বড় অসহায় লাগছে আজ ওর।হঠাৎ ওর ঘরের দরজায় কেউ আওয়াজ করে।রুকু এসেছে ভেবে ব্যালকনি ছেড়ে গিয়ে দরজা খুলে হৃদপিন্ড গলায় আটকে যায়।যার কথা কল্পনা করে প্রতিটা ক্ষন রাজীবের এই ঘরে কাটে,সেই কল্পনার অহনা আজ অন্যের দেওয়া সিঁদুর মাথায় ওর দরজার সামনে নতমুখে দাঁড়িয়ে আছে।দম দেওয়া কলের পুতুলের মতো রাজীব নিজের ঘরের দরজা থেকে সরে দাঁড়ায়…।

ক্রমশ…

You may also like

2 comments

Konika das September 1, 2021 - 4:21 PM

অসাধারণ

Reply
Tamali September 2, 2021 - 12:17 AM

ধন্যবাদ।

Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!